Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২২nd জানুয়ারি ২০২৫

বিনাপাটশাক-১

জাতের নামঃ

বিনা তোষাপাট১

বিনা তোষাপাট১ এর বৈশিষ্ট্যসমূহ

  • আগাম বপন উপযোগী (মার্চ এর তৃতীয় সপ্তাহ- এপ্রিল)
  • পাতা মসৃণ এবং আকৃতি গোলাকার লেন্সাকৃতি বিশিষ্ট
  • গাছের ছালে ফাইবার বান্ডেলের ঘনত্ব বেশী
  • জীবনকাল ১০০-১০৭ দিন
  • স্থানভেদে গাছের উচ্চতা ৩.০০-৩.৭১ মিটার, স্বাভাবিক গড় উচ্চতা মাতৃজাত অপেক্ষা ২৫-৩০ সে. মি বেশি
  • বীজ ধূসর বর্ণের এবং এক হাজার দানার ওজন ১.৮৩ গ্রাম
  • মাতৃজাত জেআরও-৫২৪ অপেক্ষা উন্নত আঁশ বিশিষ্ট (অধিকতর উজ্জল এবং শক্ত)
  • পাটের আঁশের ফলন ৩.২-৪.০ টন/হেক্টর
  • প্রতি পডে ১৯০-২২৫টি বীজ থাকে যা মাতৃজাত হতে ৩০-৫০টি বেশি।
  • বীজের ফলন ৭৫০-১০০০ কেজি/হেক্টর

চাষাবাদ পদ্ধতি

বপনকাল

মার্চের ৩য় সপ্তাহ হতে এপ্রিল (ফাল্গুনের তৃতীয় সপ্তাহ হতে চৈত্র মাস পর্যন্ত) তবে বৃষ্টির সময় না বপন করা উত্তম।

 

জমি নির্বাচন

পানি নিষ্কাষনের সুবিধাসহ উঁচু বা অপেক্ষাকৃত মাঝারি উঁচু উর্বর জমি এ জাত চাষের জন্য উত্তম। মাঝারি নিচু জমিতে আদ্রতা থাকলে এ জাত বপণ করা যায়। পলি দো-আঁশ মাটি সবচাইতে বেশি উপযোগী তবে এঁটেল থেকে বেলে দো-আঁশ মাটিতেও তোষাপাট চাষ করা যায়। জমি তৈরির সময় আগাছা ভালভাবে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

 

জমি তৈরি

তোষাপাট এর জন্য জমি ৫/৬টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ভালো করে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে এবং জমিতে আগাছা থাকলে ভালভাবে পরিষ্কার বা তুলে ফেলতে হবে। মিহি ঝুরঝুরে মাটি করে বীজ বপন করতে হবে। মিহি মাটি বীজ বপনের জন্য উত্তম। 

 

বীজ শোধন

বপনের আগে বীজ শোধন করে নিলে ভাল হয়। প্রতি ৪০০ গ্রাম বীজের জন্য ১ গ্রাম প্রোভিটাভ্যাক্স বা অটোস্টিন অথবা নোইন নামক বীজ শোধনকারী ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। শোধিত বীজ জমিতে বপন করলে চারা গজানোর হার বেড়ে যায়। বীজ গজানোর পরে অনেক সময় পিপঁড়া ও পাখি পাটের দানা ও চারা গাছ উঠিয়ে ফেলে, এ ক্ষেত্রে বীজ বপনের সময় সেভিন ডাস্ট ও ফুরাডান মিশিয়ে বীজ বপন করা ভালো।

বীজ বপণ ও সার প্রয়োগ

সারিতে বপণ করার জন্য হেক্টর প্রতি ৫-৬ কেজি এবং ছিটিয়ে বপণ করার জন্য হেক্টর প্রতি ৬-৭ কেজি বীজ প্রয়োজন। বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা ৯০% বা অধিক হওয়া উচিত, এর কম হলে আনুপাতিক হারে বীজ বেশি দিতে হবে। সুনিষ্কাশিত উঁচু, দোঁয়াশ এবং বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগের মাত্রা নিম্নের ছকে প্রদর্শিত হল। তবে গোবর বা অন্যান্য জৈবসার ব্যবহার করলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার আনুপাতিক হারে কমিয়ে আনতে হবে।

 

সারের নাম

হেক্টর প্রতি (কেজি)

ইউরিয়া

১৯৫-২১০

টিএসপি

৫০-৬০

এমওপি

৩০-৪০

জিপসাম

৯০-১১০

 

জমি তৈরির শেষ চাষের সময় ছক-২ এ নির্দেশিত মাত্রার অর্ধেক ইউরিয়া এবং সম্পূর্ণ মাত্রার টিএসপি, এমপি ও জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে। চারার বয়স ৪০-৪৫ দিন হলে জমিতে নিড়ানি দিয়ে, চারা পাতলা করে নির্দেশিত মাত্রার অবশিষ্ট অর্ধেক ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সার দেওয়ার সময় জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকা জরুরী। এতে গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং ফলন বাড়ে।

সেচ ও নিষ্কাশন

পাটে সাধারণত সেচের প্রয়োজন হয় না তবে মাটি অধিক শুষ্ক হলে বা অতিরিক্ত খরায় গাছের বৃদ্ধি পর্যায়ে এক বার পানি সেচের প্রয়োজন হতে পারে।

 

 আগাছা দমন

পাট বপনের পর গাছ ৩-৪ পাতা বিশিষ্ট হওয়ার পর প্রথম বার এবং গাছ লাগানোর ২০-২৫ পরে দ্বিতীয় বার আগাছা থাকলে নিড়ানী ও অতিরিক্ত গাছ তুলে আলগা করে দিতে হবে।

রোগ বালাই ও পোকামাকড় দমন

রোগবালাই ও পোতামাকড়ের তেমন কোন আক্রমন দেখা যায় না। তা সত্বেও পাটের সাধারন রোগ হিসেবে আগামরা বা কান্ডপচা রোগ দেখা দিলে প্রাথমিকভাবে রোগাক্রান্ত গাছসমূহকে উপড়ে ফেলে পরবর্তীতে আক্রমন রোধ করার জন্য ম্যানকোজেব গ্রুপের যে কোন ছত্রাকনাশক ০৩ দিন পরপর ০৩ বার স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়াও মাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে সিনমেকটিন ১.৮ ইসি বা অ্যামবুশ ১.৮ ইসি গাছের উপরের দিকের কঁচি পাতার নিচের পৃষ্ঠে ০৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

গুনগত মানসম্পন্ন আঁশ উৎপাদন

পাট গাছ কাটার পর ১০-১২ টি গাছ একত্রে আটি বেঁধে জমিতে ৩-৪ দিন খাড়া রাখার পর, পাতা ঝড়িয়ে পানিতে জাগ দেয়া শ্রেয়। ভালো মানের আঁশ পাওয়া যায় যদি প্রবহমান পানিতে জাগ দেওয়া হয়। পানির প্রবাহের গতি হবে প্রতি ঘণ্টায় এক-চর্তুথাংশ মাইলের বেশি। বদ্ধ পানিতে পাট জাগ দিলে আঁশ কালো হয়ে যায়। সাধারনত ১৫-১৮ দিনের মধ্যে জাগ সম্পন্ন হয়ে যায় এবং আঁশ ছাড়িয়ে রোদ্রে শুকাতে হয়।

বীজ উৎপাদন

বীজ উৎপাদন এর জন্য আগষ্ট মাসে কাটিং লাগিয়ে ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে কর্তন করা যায়। আঁশ ফসলের জন্য বপণকৃত গাছের বয়স ৯৫-১০০ দিন হলে সুস্থ ও সতেজ গাছের উপরের অংশ থেকে প্রায় ৩০-৪৫ সেন্টিমিটার কেটে নিয়ে প্রতিটিকে এমনভাবে ২-৩ টুকরা করতে হবে যেন প্রতি টুকরায় কমপক্ষে ২ টি পর্ব বা গিঁট থাকে। কাটা টুকরো বা কাটিংগুলোকে যথেষ্ট রস সমৃদ্ধ মাটিতে ৮৫ ডিগ্রি কাত করে পুঁতে দিতে হবে। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে কাটিং থেকে প্রচুর ডালপালা বের হয়, যা থেকে ভাল মানের বীজ উৎপাদিত হয়।

ফসল সংগ্রহ ও বীজ সংরক্ষণ

পাটের বীজ খুবই সংবেদনশীল বা স্পর্শকাতর। ভালো ও গুণগতমানের বীজ পেতে হলে ফসল সঠিক সময়ে তুলতে হবে। যখন গাছের শতকরা ৮০-৯০ ভাগ পড পরিপক্ক হয় তখনই পাট তোলার উপযুক্ত সময়। পরিপক্ক হলে পাটের পডের শিরা-উপশিরাগুলি স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং গাছের পাতাগুলি হলুদ রং ধারণ করে নিচের পাতাঝরে পড়তে থাকে। পাটের পড ছেঁড়ার পর পডের ভিতরে বীজ ধূসর রং ধারণ করলেই বুঝতে হবে ফসল উঠানোর উপযুক্ত সময় হয়েছে।

ফলন

পাটের আঁশের ফলন ৩.২-৪.০ টন/হেক্টর

 

প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুনঃ

(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা)
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী

ড. সাকিনা খানম

মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান

ক্রপ ফিজিওলজি বিভাগ

বিনা, ময়মনসিংহ-২২০২

কল করুনঃ +৮৮০১৭৩১-৫৫৬২৩২

ই-মেইলঃ sakina_71@hotmail.com